শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ অপরাহ্ন
সিএমপির হালিশহর থানার অভিযানে সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের ০৫ জন সদস্য গ্রেফতার, অপহৃত স্বর্ন ব্যবসায়ী উদ্ধার।
ডেক্স নিউজঃ- সি এম পি মিডিয়া
সঞ্জিত কুমার রায় (৫০) পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্সে চাঁদনী জুয়েলার্স নামীয় দোকানে ব্যবসা করেন। দুজন মহিলা গত ২৮/১০/২২ ইং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে বিভিন্ন স্বর্ণালংকারের মূল্য দেখে এবং তারা কিছু স্বর্ণালংকার বিক্রি করবে মর্মে জানিয়ে তার মোবাইল নাম্বার নিয়ে যায়। ২৯/১০/২২ ইং তারা সঞ্জিত কুমার রায়কে ফোন করে পরিচয় দিয়ে তাদের ব্যবহারের কিছু স্বর্ণালংকার আর্থিক সংকটের জন্য বিক্রি করবে বলে জানায়। তিনি স্বর্ণালংকারগুলো কিনতে সম্মত হলে তারা তাকে স্বর্ণালংকারগুলো দেখার জন্য হালিশহর থানাধীন নয়াবাজার মোড়ে আসতে বলে। তিনি পার্শ্ববর্তী দোকান মালিক শংকর দেবকে স্বর্ণ কিনার জন্য হালিশহর থানাধীন নয়াবাজার মোড়ে যাবে বলে জানিয়ে দোকান বন্ধ করে সরল বিশ্বাসে উল্লেখিত স্থানে গিয়ে তাদের দেওয়া নাম্বারে ফোন করলে তারা সঞ্জিত কুমার রায়কে নয়াবাজার মোড়ে তায়েফ হোটেলের বিপরীত পাশে রাস্তার উপর থাকা সিএনজির পাশে যাওয়ার জন্য বলে।
তিনি তাদের কথামত অজ্ঞাতনামা সিএনজির সামনে গেলে সিএনজিতে থাকা দুজন তাকে চাকু ধরে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে সিএনজি যোগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। কয়েক মিনিট কথা বলার পর সেখানে আরো দুজন মহিলা আসে । তিনি তাদের দেখে চিনতে পারেন।
পরবর্তীতে সকল বিবাদীরা তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে একটি বিল্ডিংয়ের ২য় তলার একটি রুমের ভিতর আটক রেখে ১,৫০,০০০/- টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং তাদের দাবীকৃত টাকা না দিলে উক্ত মহিলাদের সাথে ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে তাকে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে। ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিবাদীরা ভিকটিমকে কিল, ঘুষি মেরে খুন করে ফেলবে মর্মে হুমকী প্রদান করে।
একপর্যায়ে ভিকটিম প্রাণ ও মানসম্মান বাঁচানোর তাগিদে ১,২০,০০০/-টাকা দিবে মর্মে সম্মত হয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল থেকে পাশ্ববর্তী ব্যবসায়ী শংকর দেব এর ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন করে নগদ ১,২০,০০০/-টাকা জরুরী ভিত্তিতে সংগ্রহ করে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্স এর নিচে আলিফ হোটেলের সামনে আসার জন্য বলে এবং ০১ জন লোক বর্ণিত নাম্বার থেকে ফোন করে তথায় গেলে টাকা গুলো তাকে দিয়ে দেওয়ার জন্য বলে। তখন ভিকটিমের কথাবার্তা সন্দেহজনক হওয়ায় শংকর দেব বিষয়টি ভিকটিমের ভাইকে ফোন করে জানায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের ভাই এবং তার পাশ্ববর্তী ব্যবসায়ী শংকর দেব হালিশহর থানায় এসে পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে বিস্তুারিত জানায়।
বাদীর প্রাথমিক মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে উপ-পুলিশ কমিশনার এবং অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) সার্বিক নির্দেশনায় সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডাবলমুরিং জোন) এর তত্ত্বাবধানে হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৯/১০/২০২২ ইং পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্স এর সামনে থেকে মুক্তিপণের দাবীকৃত টাকা নিতে আসা মোঃ আমিনুল ইসলামকে গ্রেফতার করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হালিশহর থানাধীন ০১নং পানিরকল এলাকা থেকে মোঃ নুরুল ইসলাম, মোঃ সেলিম, আয়েশা আক্তার প্রঃ ফিরোজা, রেহেনা আক্তার মীমদের হেফাজত থেকে ভিকটিম সঞ্জিত কুমার রায় (৫০)কে উদ্ধার করেন এবং উল্লেখিত বিবাদীদেরকে গ্রেফতার করেন এবং ঘটনায় ব্যবহৃত মোবাইল ও সীমকার্ড উদ্ধার করেন।
মোঃ আমিনুল ইসলাম(৩৩), পিতা-মোহাম্মদ মোস্তফা মিয়া, মাতা-মৃত মনোয়ারা বেগম, স্থায়ী: আমানটুলা, কাস্কাবাড়ী, মটবাড়িয়া, থানা- মীরসরাই, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমান: বিশ্ব কলোনী আবাসিক, এল-ব্লক, ১৩নং প্লট, গোপাল বাবুর ভাড়া বাসা, থানা- আকবর শাহ্, জেলা-চট্টগ্রাম।
মোঃ নুরুল ইসলাম(৩৭), পিতা-মৃত গোলাম আওয়াল, মাতা-মোছাঃ দিলদার জাহান, স্থায়ী: ০৩নং ঝিল, ফিরোজশাহ্, ভান্ডারী বাড়ী, থানা-আকবর শাহ্, জেলা-চট্টগ্রাম।
মোঃ সেলিম(৩৭), পিতা-মৃত তোফায়েল আহম্মদ, মাতা-হালিমা বেগম, স্থায়ী: শান্তিহাট, কুসুমপুর, চৌধুরী বাড়ী, থানা-পটিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম, বর্তমান: বিশ্ব কলোনী আবাসিক, ও-ব্লক, হাউজ নং-৪৭, থানা- আকবরশাহ্, জেলা-চট্টগ্রাম।
আয়েশা আক্তার প্রঃ ফিরোজা(৩২), পিতা-আব্দুল মতিন, মাতা-মোমেনা বেগম, স্বামী- মোঃ সেলিম, স্থায়ী:-নিজ গালুঘর তালুকদার বাড়ী, থানা-রাজাপুর, জেলা-ঝালকাঠি, বর্তমান: বিশ্ব কলোনী আবাসিক, ও-ব্লক, হাউজ নং-৪৭, থানা- আকবরশাহ্, জেলা-চট্টগ্রাম।
রেহেনা আক্তার মীম(২২), পিতা-মোঃ দেলোয়ার হোসেন, মাতা-ফেরদৌসি বেগম, স্থায়ী: মধ্যম কাঠাল বাড়ী, হাওলাদার বাড়ী, থানা- মঠবাড়িয়া, জেলা-পিরোজপুর, বর্তমান: ফ্রি পোর্ট, জলক বাজার পিছনে, বেতু হওলাদারের বাড়ী, থানা- চট্টগ্রাম বন্দর, জেলা-চট্টগ্রাম।